ASUS ROG Claymore Keyboard Overview

ROG এর লোগো দেখে বুঝতেই পারতেছেন সাধের লাউটা আসুসের। তাও আবার ROG সিরিজের একটি অন্যতম গিয়ার। যাইহোক, জিনিশটি ওয়ান এন্ড অনলি ASUS ROG Claymore Keyboard.

ASUS এর হাই এন্ড কীবোর্ড এটি তাই বলতে গেলে প্রায় সব ধরনের ফিচারস পাবেন। সবচেয়ে বড় একটা ফিচার ছিল এর ডিটাচেবল(Detachable) নাম্বার প্যাড ফিচারটি। যাতে সহজেই আপনি আপনার কীবোর্ডকে কম্প্যাক্ট কীবোর্ড করতে পারবেন।

আনবক্সিং

বক্সের ভিতরেই প্লাস্টিক কভারের মধ্যে দুটি সেকশনে কীবোর্ড আর নাম্বার প্যাডটি আছে। পাউচে মোড়ানো মেইন কীবোর্ড আর নাম্বারপ্যাড ছাড়াও ব্রেডেড ডিটাচেবল কেবল।
এছাড়া কিছু ROG-এর মেটালিক স্টিকারস,রগ সিরিজে ওয়েল্কাম কার্ড এবং ইউজার ম্যানুয়াল।

ফার্স্ট লুক

প্রিমিয়াম লুকিং কীবোর্ডটির টপ টু বটম সবকিছুই প্রিমিয়াম। ডিটাচেবল ব্রেডেড কেবল থেকে কীবোর্ডের টপ কোন কিছুতেই কোন কমতি দেখা যায় নি।
তবে আসল কমতিটা কোথায় তা পরেই বলছি।
কিবোর্ডের টপটি এলুমিনিয়ামের যা মায়ান ইন্সপায়ার্ড ডিসাইনের।
হ্যা সেই মায়ানদের থেকে ডিসাইনটি নেয়া যারা বলেছিল ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দুনিয়া নাই হয়ে যাবে। 😛

যাইহোক এই মায়ান ফিনিশটা কীবোর্ডটিকে আরো এগ্রেসিভ একটা লুক দিয়েছে।
কীবোর্ডের দুই পাশে দুটি কানেক্টর যা নাম্বারপ্যাডের পজিশন সুইচ করতে সাহায্য করবে। আসলে নাম্বারপ্যাডটি ডিটাচেবল।
কীবোর্ডটির মুল আকর্ষণ এই ফিচারটি। যাতে করে আপনি কীবোর্ডটিকে একটি TKL ফরম্যাটে নিতে পারবেন আবার ফুল সাইজ কীবোর্ড হিসেবেও সুইচ করতে পারবেন।

মুলত এটি এর আগের ভার্সন রগ ক্লেইমোর কোর থেকে ইন্সপায়ার্ড একটি কিবোর্ড।

কীবোর্ডটির নিচের দিকে পাস্টিক বেস যাতে রাবার ফিট, কেবল পাস-থ্রু(Pass Through), কিবোর্ড ফ্লিপ স্ট্যান্ড যাতে রাবার ফিট করা, ইউএসবি কেবল ইনপুট।
কেবলটি ডিটাচেবল।

নাম্বারপ্যাডটির উপরে একটি ভলিউম হুইল আছে । যেহেতু কীপ্যাডটি ডিটাচেবল কীবোর্ডের দুই পাশে পিন টাইপ ইনপুট আছে এবং এই পিন ইনপুটগুলা ঢাকার জন্য রাবার কভার আছে তাই সুন্দর্য নিয়ে ভাব্বার কারনই নেই।

ASUS Claymore keyboard

যেহেতু এটা একটি মেটাল কন্সট্রাকশানের কীবোর্ড তাই এর থেকে অলমোস্ট জিরো বেন্ড আশা করাটা ভুলের কিছু না। এবং তা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। নিচে প্লাস্টিক বেস হলেও উপরের এলুমিনিয়াম বেসের জন্য কিবোর্ডটি যথেস্ট ডিউরেবল। তাই গেমিং টাইমে রেজ করার সময় কীবোর্ডে বারি মারলেও কিবোর্ড না ভাঙ্গার সম্ভাবনা খুব কম।
আমার কথা শুনে কীবোর্ড ভাংলে আমি দায়ী থাকবো না তাই সাবধান। কীবোর্ডটির ওজন ৭৭০ গ্রাম নাম্বারপ্যাড ছাড়া আর নাম্বারপ্যাড সহ ৯৫০ গ্রাম।

যাইহোক, ফ্লিপ স্ট্যান্ডে যথেস্ট ভাল এংগেল পাওয়া যায়। এবং যারা ফ্লিপ স্ট্যান্ডে অভস্ত্য তাদের জন্য ব্যাপারটা আরগোনমিক মনে হতে পারে। তবে রিস্ট রেস্ট না থাকায় রাইজার অবস্থায় আমার কাছে তেমন আরগোনমিক মনে হয় নি।

ফাংশনালিটি এবং পার্ফামেন্স

অনেক বললাম কীবোর্ডটির ডিটাচেবল নাম্বারপ্যাড বা এর মডিউলারিটি নিয়ে। মুলত এই মডিউলারিটির কিছু ফাংশনালিটি আছে। যেমন আপনি ডানদিকে নাম্বারপ্যাডটি কানেক্ট করলে তা একটি সাধারন নাম্বারপ্যাড হিসেবেই কাজ করবে।
আবার যখন বামদিকে নাম্বারপ্যাডটিকে কানেক্ট করবেন তখন এটি হয়ে যাবে একটি ম্যাক্রো-কী এর দোকান। আই মিন নাম্বারপ্যাডটিকে বামদিকে কানেক্ট করলে এর বাটনগুলো ম্যাক্রোকী হিসেবে কাজ করবে।

নাম্বারপ্যাড ছাড়া কীবোর্ডটি অনেক কম জায়গা নেয় যা আপনার মাউস মুভমেন্টের জায়গাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
আর ভলিউম হুইলটি যেটি আবার মিউট/আনমিউট বাটন হিসেবে কাজ করবে এবং হুইলটির বাটন যথেস্ট ক্লিকি।
আর ন-কি রোলওভার এবং ১০০% এন্টি ঘোস্টিং আছেই।

পার্ফামেন্স বলতে কীবোর্ডের কী ডিস্ট্যান্স এবং কীক্যাপ শেপের উপরে ডিপেন্ড করে। যা আপনাকে নিরাশ করবে না। তবে হাত একটু বড় হলে হয়তোবা আপনাকে কী ডিস্টান্সে অভস্ত্য হতে একটু প্রবলেম হতে পারে কিন্তু পরে ইউজড টু হতে বেশি সময় লাগবে না।
রিপিট এক্সেলারেশন নামের একটি ফিচার আছে যা পার্ফামেন্সের মধ্যেই পড়ে। কোন কী চেপে ধরলে তার রিপিট হবার যে টাইমিং-টি আছে তা আপনি নিজের মত করে সেট করতে পারবেন। যা আপনার টাইপিং স্পিডকে আরো সাপোর্টি দিবে।
এছাড়া হট কী ব্যবহার করে বায়োসের টুইকিং এবং ওভারক্লকিং, সিপিউর ফ্যান স্পিড কন্ট্রল ইত্যাদি কাজ কীবোর্ড থেকেই করা যাবে যদি আপনার মাদারবোর্ড আসুসের হয় আর কি।

কীবোর্ড সুইচ

কীবোর্ডটি Red,Blue,Brown,Black চার ধরনের সুইচের আছে। আমাদের রিভিউ ইউনিটটি রেড সুইচের। সুইচটি হল সুদুর জার্মান মেড চেরি এমএক্স আরজিবি সুইচ। মেকানিকাল কীবোর্ড ইউজাররা জানেই চেরি এমএক্স সুইচের মান কতটা ভাল। এবং প্রায় সব ব্রান্ডেড ফ্লাগশিপ কীবোর্ডের সুইচ এই ব্রান্ডেরই হয়ে থাকে।
এই সুইচটি যথেস্ট ট্যাকটাইল এবং রেসপন্সিভ এবং এর ডিউরেবিলিটি ৫০ মিলিয়ন কীস্ট্রোক পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

গেমিং কীবোর্ড বলে রেড সুইচ ব্যবহার করা হয়েছে। যেহেতু এর একচুয়েশন ফোর্স কম যা কিনা মাত্র ৪৫ গ্রাম তাই ফাস্ট কি প্রেসিং এবং মুভমেন্টের জন্য এই সুইচ আদর্শ। টাইপিং এও এই সুইচ অনেক ভাল আর যাদের টাইপিং স্পিড মোটামুটি ফাস্ট তারা কমফোর্ট ফিল করবে এই সুইচে।
এই সুইচের অনেক সাইলেন্ট। তাই ব্লু সুইচের মত ক্লিকি সাউন্ড পাওয়া যাবে না। আর রেড সুইচ লিনিয়ার বলে কীস্ট্রোকের সময় একটা স্মুথ ফিল পাওয়া যাবে।

আরজিবি

কীবোর্ডটিতে যথেস্ট প্রিমিয়াম মানের আরজিবি লাইট দেয়া আছে যা আপনার নজর কাড়তে বাধ্য। ইভেন এর কালার একুরেসি আমার কাছে কিছু কীবোর্ড থেকে একটু বেশী ভাল লেগেছে।
আর যদি আপনার কীবোর্ড,মাউস,মাদারবোর্ড, জিপিউ সবই আসুস এর হয় তাহলে তো কথাই নেই। Aura সফটওয়্যারটির মাধম্যে আপনার সব ROG প্রডাক্টসের মধ্যে লাইটিং সিংকিং করা যাবে। যেমনটা দেখেছি আমরা রেজরের পেরিফেরালসে।
এর কিছু লাইটিং ইফেক্টস হল, স্ট্যাটিক, ব্রিদিং, কালার সাইকেল, ওয়েভ, রিপল, রিয়েক্টিভ, Starry night, Quicksand আর কাস্টম।

ওভারঅল মতামত

রিস্ট রেস্ট না থাকায় প্রথমে একটু প্রবলেম মনে হলেও একটা সময়ে আমি ইউজড টু হয়ে গেছি।
প্রিমিয়াম জিনিশের ফিলটাও প্রিমিয়াম আর এর ফাংশনালিটি আমার কাছে বেশি ভাল লেগেছে।
নাম্বারপ্যাডটা আলাদা করে আমি মাউস মুভমেন্টের জন্য যথেস্ট জায়গা করে নিতে পেরেছি।

কিবোর্ডের আরজিবির লাল,নীল,সবুজ দেখতে দেখতে শেষ করছি আমি
গুড বাই।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here