24 C
Dhaka
Tuesday, March 26, 2024

Ajaaz K870T Review: বাজেটের মধ্যে অসাধারণ কিবোর্ড?

- Advertisement -

আমাদের দেশে ম্যাকানিক্যাল কিবোর্ড কিনার জন্য চার থেকে ৫ হাজার টাকার বাজেটকে খুবই পপুলার বাজেট বলা যায়। এই বাজেটের মধ্যে আমাদের দেশে প্রচুর ম্যাকানিক্যাল কিবোর্ড পাওয়া যায়। আজকে আমি যে কিবোর্ডের রিভিউ করতে যাচ্ছি এটিও এই বাজেট রেঞ্জের মধ্যই। Ajaaz K870T এই কিবোর্ডটির মূল্য ৪৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে বেশ কিছু সেলার চাইনা থেকে Razor, Royal Kludge, Skylong, Durgood ইত্যাদি কিবোর্ড গুলো প্রি অর্ডার বেসিসে সেল করছে। আমার এই কিবোর্ডটিও তেমন একজন সেলার থেকে নেওয়া।

প্রায় ৩ সপ্তাহ ব্যবহার করার পর কিবোর্ডটির খুঁটিনাটি তুলে ধরার চেষ্টা করব।

- Advertisement -

হাইলাইটেড স্পেকসঃ

  • ওয়্যারড/ওয়্যারলেস উভয়ভাবেই চালানো যাবে।
  • ব্লুটুথ ৩.০ দিয়ে একসাথে ৩টি ডিভাইস কানেক্ট করা যাবে।
  • উইন্ডোজ/ম্যাক উভয় অপারেটিং সিস্টেমে সাপোর্ট।
  • ২০০০ এমএএইচ ব্যাটারি।
  • একটি স্ক্রল হুইল রয়েছে যা দিয়ে ভলিউম ও ব্রাইটনেস এডজাস্ট করা যাবে।
  • কিবোর্ডই ফাংশন কি দ্বারা লাইটিং ইফেক্টস,ব্লুটুথ ও যাবতীয় কন্ট্রোল করা যাবে।
  • N key rollover।
  • ১০টি এক্সট্রা কালারফুল PBT ক্যাপস।
  • ১৮টি+৩টি আরজিবি লাইটিং ইফেক্টস।

আনবক্সিংঃ

একদম সাদাসিধে আনবক্সিং এক্সপেরিয়েন্স।  বক্স খুলতে সাদা পলিথিনে মোড়ানো কিবোর্ড সাথে কিছু এক্সট্রা এক্সেসরিজ। এর মধ্যে রয়েছে একটি কিক্যাপ পুলার, ১০টি এক্সট্রা কিক্যাপ, একটি সাদা ডিটেচেবল ব্রেইডেড ক্যাবেল ও ইউজার ম্যানুয়েল।

বিল্ড কোয়ালিটিঃ

বক্স থেকে বের করার সময়ই এই কিবোর্ডেটি খুব হেভি ফিল হয়েছিল। পরে বক্সের গায়ে দেখি এই কিবোর্ডের ওজন প্রায় ৯০০ গ্রামের মত। কিবোর্ডটি পুরোটায় প্লাস্টিকের তৈরি কিন্তু হাতে নিলে মোটেও চিপ ফিল হবে না উপরন্ত বেশ শক্ত পোক্ত বিল্ড বলা যায়। এমনকি দুইহাত দিয়ে বেন্ড করার চেস্টা করেও নূন্যতম বেন্ড করা যায়নি। রাবার ফিটগুলোতে কিবোর্ডটিকে থাকা অবস্থায় সহজে নড়ানো যায় না। হাইট এডজাস্ট করার জন্য ফিটগুলোও অনেক সলিড। অন অফ করার সময় বেশ একটি স্যাটিসফায়িং সাউন্ড পাওয়া যায়। এডজাস্টেবল ফিট দ্বারা প্রায় ২সেন্টিমিটারের মত হাইট বাড়ানো যায়  ফুটগুলোতে লাগানো রাবার গুলো রিমুভেবল। কিবোর্ডটির পিছনের সামনের দিকে ৪-৫মিলি মিটারের মত একটা বাম্প রয়েছে যার কারণে এডজাস্টেবল ফিট গুলো ছাড়ায় ন্যাচারালি কিবোর্ডটি কিছুটা (৫মিলিমিটার) উপরে থাকে। বক্সের সাথে দেওয়া ইউএসবি ক্যাবলটি হচ্ছে টাইপ সি। ক্যাবলটি ব্রেইডেড ও লেন্থ ১.৬মিটার যা আসলে যথেষ্ট। ইউএসবি সি পোর্টটি একটু ভিতরে কিবোর্ডের যার কারণে প্রথম প্রথম লাগাতে একটি বেগ পেতে হয়। এছাড়া ক্যাবল রাউটিং করার ও কোনো সুযোগ নাই।

- Advertisement -

লুক ও ডিজাইনঃ

টেন-কি-লেস সাদা কিবোর্ডটি দেখতে বেশি মিনিমালিস্টিক। যদিও ব্ল্যাক কালারের ভ্যারিয়েন্টও রয়েছে। কিবোর্ডটির কি-ক্যাপস গুলো সেমি ফ্লোটিং অর্থাৎ কি সুইচগুলো একটু ভিতরের দিকে কিবোর্ডের উপরের ফ্রেইম থেকে। এই ডিজাইনের কারণে ব্যাকলিট কিছুটা Dim হয়ে যায় যেটা একটা এডভানটেজ হলেও ক্লিনিং এর সময় কিছুটা প্যারা নিতে হয়। কিবোর্ডের চারপাশে ১সেন্টিমিটারের বর্ডার রয়েছে যেটি আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে কিন্তু এটা অনেকের কাছে ভাল নাও লাগতে পারে। তা শর্তেও এলইডির ব্রাইটনেস যথেষ্ট স্ট্রং মনে হয়েছে। কি গুলোর আরগোনোমিক্যালি প্লেস করা অর্থাৎ মাঝের দুইটা রো কিছুটা নিচে অন্য রো এর কি গুলো আবার উপরে। কিবোর্ডটির একটি জিনিস বেশ প্রসংশনীয় সেটা হচ্ছে এই কিবোর্ডেটি টেন-কি-লেস ও মিনিমালিস্টিক ফর্ম ফ্যাক্টরের হওয়াতে এমনেতেই এক্সট্রা স্পেস খুব বেশি নাই কিন্তু যা খালি জায়গা গুলো খুব ভালভাবেই ইউটিলাইজ করা হয়েছে। সাধারণত টেন-কি-লেস কিবোর্ডে এরো কি এর উপরের খালি জায়গাখানা কোম্পানি গুলো তাঁদের ব্র্যান্ড নাম দিয়ে দেয়, কিন্তু Ajazz তাঁদের ব্র্যান্ড নেইম না দিয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বাটন দিয়েছে। ছোট ছোট দুইটি বাটন ও একটি রোলার দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রোলারটি অনেক হ্যান্ডি। এটি দিয়ে একই সাথে ভলিউম আবার ব্যাকলিটের ব্রাইটনেস কন্ট্রোল করা যাবে কোনো ঝামেলা ছাড়ায়। এছাড়া ESC ও F1 মাঝের দুইটি এলইডি ইনডিকের দেওয়া হয়েছে যাদের একটি ক্যাপস লক অন/অফ জন্য অন্যটি ব্যাটারি চার্জিং ইন্ডিকেটর।

সুইচঃ

এই কিবোর্ডটি মূলত ৪টি সুইচ অপশানে পাওয়া যাচ্ছে ওদের ওয়েব সাইটের তথ্য অনুযায়ী। তা হচ্ছে ব্ল্যাক, ব্রাউন,রেড ও ব্লু। আমি যে ভার্সনটি নিয়েছে তা হচ্ছে ব্রাউন সুইচের। কিবোর্ডটির প্যাকেজিং অথবা ওয়েবসাইটে কোথায়ও কোন কোম্পানির সুইচ ব্যবহার করা হয়ছে তা নিয়ে কোনো কিছু লিখা নাই। কিন্তু কিক্যাপ খুলে খুব ক্লোজলি সুইচের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সুইচের গায়ে Huano ব্র্যান্ডিং রয়েছে। Huano সুইচ নিয়ে ইন্টারনেটেও তেমন বিস্তারিত পাওয়া যায়নি। কিন্তু যথাসম্ভব ধারণা করা হচ্ছে এটি Cherry MX ক্লোনই হবে। মূলত কনটেন্ট ক্রিয়েশন ও স্টাডি পারপাসের ব্যবহার করা হবে বিধায় আমি ব্রাউন নিয়েছি। কেননা, ব্লু সুইচের মত অতিরিক্ত সাউন্ড ভাল না লাগলেও আবার টেকটাইল বাম্পও মিস করতে রাজি না তাই যাতে মোটামুটি একটা টেকটাইল বাম্প ফিল করা যায় অন্যদিকে টাইপিং সাউন্ড ও কম হয়। বেশ কিছুদিন ব্যবহারের পর, আমি বলতে পারি যে, টাইপিং এর সময় কিপ্রেস করার একটু পর হালকা করে আঙ্গুলে টেকটাইল ফিডব্যাক অনুভব করা যায়। একটা কি প্রেস করার পর হাফ ওয়েতে ঐ কি রেজিস্টার হয়। তাঁদের ওয়েবে কি নিয়ে বিস্তারিত না থাকায় একচুয়েশন ফোর্স কর গ্রাম তা বলা গেলেও এটা বলা যাচ্ছে অন্যান্য ক্লোন ব্রাউন সুইচ এর মতই হবে। এই বাজেট রেঞ্জের বেশ কিছু কিবোর্ড(যেমনঃ Redragon K552) হট-সোয়াপাবল (সুইচ গুলো সোল্ডার করা ছাড়াই পিসিবিতে বসানো থাকে) হলেও এটি এই গুরুত্বপূর্ণ ফিচারটি এই কিবোর্ডে নেই। কোনো একটা কি নস্ট হলে কিবোর্ডটি খুলে সোল্ডারিং এর ঝামেলায় যেতে হবে। দুইটা শিফট, এন্টার, বেক স্পেস ও স্পেফ মোট এই পাঁচটি কি’তে স্ট্যাবিলাইজার রয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে স্ট্যাবিলাইজার গুলো ফ্যাক্টলি লুবড। স্ট্যাবিলাইজার গুলো যথেষ্ট ভাল মনে হয়েছে কারণ স্ট্যাবিলাইজার ইউস করা কি গুলোর একদম কর্নারে আঙ্গুলের আলতো চাপ দিলেও কি প্রেস হয়ে যাচ্ছিল।

- Advertisement -

কিক্যাপসঃ

কি-ক্যাপ গুলো Double Shot ABS প্লাস্টিকের তৈরি। শাইন থ্রু হওয়াতে এলইডি ইল্যুমিনেশন  লেজেন্ড মধ্য দিয়ে কি ক্যাপের উপরে দেখা যায়। কি’তে দেওয়া লেজেন্ড গুলো সিম্পল বাট সুন্দর। একটা কি থেকে আরেকটা কি এর মধ্য মোটামুটি গ্যাপ রয়েছে যার ফলে টাইপো হওয়ার সম্ভবনা কম। এছাড়া কি ক্যাপের আপার সার্ফেস ম্যাট ফিনিস দেওয়াতে কি স্লিপ করার পসিবিলিট কম। ওহ, কিবোর্ডের সাথে এক্সট্রা ১০টি Single Shot PBT কালারফুল কি ক্যাপ এসেছে। যা দিয়ে কিবোর্ডটির দেখতে আরো সুন্দর দেখায়। কিন্তু PBT কি ক্যাপস গুলো শাইন থ্রু না হওয়াতে এলইডি ইল্যুমিনেশন লেজেন্ড মধ্য দিয়ে দেখা যায় না। কি ক্যাপের কোয়ালিটির কথা বলতে গেলে ABS গুলো বেশ শক্তপোক্ত। চাপ দিয়ে বাঁকানো যায় না। এইদিকে PBT, ABS থেকে কিছুটা বেশি থিক। তাই PBT কিক্যাপ গুলোর কোয়ালিটির কথা আর বললাম না। কিন্তু PBT আর ABS কিক্যাপ গুলোর টাইপিং সাউন্ড সম্পূর্ণ আলাদা। ABS থেকে PBT কি ক্যাপের সাউন্ড বেটার শোনায় কানে। কি ক্যাপ গুলোতে কিছুটা wobble লক্ষ্য করেছি যদিও বাজেট তুলনা করলে এটি খারাপ কিছু না। এছাড়া  Cherry MX ক্লোন হওয়াতে Cherry MX ইক্যুভেলেন্ট যেকোনো কিক্যাপ সাপোর্ট করবে তাই ভবিষ্যতে সহজেই নিজের ইচ্ছামত কিক্যাপ লাগানো যাবে।

আরজিবি লাইটিংঃ

কিবোর্ডটি ফুললি আরজিবি সাপোর্টেড অর্থাৎ প্রতিটা কি’তে ১৬মিলিয়ন কালার থেকে যেকোনো একটা যাবে। Fn+ Ins,Home,PgUp,Del,End, PgDn দিয়ে ১৮টি আরজিবি লাইটিং মোড একটা থেকে আরেকটা যাওয়া যায়। এই ১৮টি মোডের মধ্যে জনপ্রিয় সব মোড রয়েছে। স্পিড,কালার ও ডিরেকশন চেইঞ্জ করা যায় Fn+এরো কি দিয়ে। ১৮টি মোড বাদেও আরো ৩টি কাস্টোমাইজেবল মোড রয়েছে।

ওয়্যারলেস মোডঃ

কিবোর্ডের পিছনে একটি মাস্টার সুইচ রয়েছে যা দিয়ে ব্লুটুথ কানেকটিভিটির জন্য রেডি হয়। এর পর আবার BT বাটন যেটা রোলারের পাশেই আছে ঐটাতে ক্লিক করলে ইউ এসবি কানেক্টড থাকলে তা ডিসকানেক্টেড হয়ে যায়। তারপর প্রথমবারের নতুন কোনো ডিভাইসে কানেক্ট করার জন্য Fn+P ও Fn+1/2/3 যেকোনো একটি সিলেক্ট করলেই কিবোর্ড নেইম ভিসিবল হবে ডিভাইসে। কানেক্ট হতে বেশি সময় লাগে না। যদিও আমি ফুল ব্যাটারি ড্রেইন করা পর্যন্ত একবার কিবোর্ডটি ব্যবহার করি নি ওয়্যারলেস মোডে কিন্তু তাঁদের ওয়েবসাইটের  দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্যাকলিট ছাড়া ১০০ ঘন্টা টানা ইউস, ব্যাকলিট সহ ৮ ঘন্টা ও স্ট্যান্ডবাই মোডে ২০০ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটাবি ব্যাকাপ দিবে। ফুল চার্জ হতে ৪ ঘন্টা সময় লাগবে। কোনো একটিভিটি না থাকলে কিবোর্ডটির ব্যাকলিট অটো অফ হয়ে ৫ মিনিট পর, ৩০ মিনিট কোনো একটিভিটি না থাকলে স্ট্যান্ডবাই মোডে চলে যাবে। ওয়্যারলেস মোডে যতক্ষন ব্যবহার করেছি খুব বেশি ডিলে নোটিশ করিনি।

সফটওয়্যারঃ

কিবোর্ডটির লে আউটের দিকে একবার থাকালেই যে কেউ সহজেই বুঝে যেতে পারবে যে যাবতীয় সব কিছু কিবোর্ড দিয়েই করা যাবে। ম্যাক/উইন্ডোজ লেআউটে সুইচ করা থেকে শুরু করে কিবোর্ড রিসেট দেওয়া পর্যন্ত সব কিছু Fn দিয়েই করা যায়। তাই Ajazz কোনো সফটওয়্যার প্রোভাইড করেনি কিন্তু সেলার জানালো চাইলে Rakk Lam Ang Pro কিবোর্ডের সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা যাবে। হয়ত দুইটি কিবোর্ডের পিসিবি একই তাই এমনটি সম্ভব হয়েছে। শুধু মাত্র ওয়্যারড অবস্থায় সফটওয়্যারটি কাজ করে। সবকিছু কিবোর্ডেই করা গেলেও সফটওয়্যারটি আরো কিছু এক্সট্রা অফার করছে। প্রথমত, প্রতিটা কি’এর রোল চেঞ্জ করা যাবে। দ্বিতীয়ত, ম্যাক্রো কি সেটাপ করা যাবে, আরজিবি আরো ভাল করে কন্ট্রোল করা যাবে। ইউজার ডিফাইন মোডে প্রতিটার কি’তে আলাদাভাবে কালার সিলেক্ট করা যাবে। এছাড়া গেমিং মোড অন/অফ ও ফ্যাক্টরি রিসেট করা যাবে সফট ওয়্যারটির সাহায্য।

- Advertisement -

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here