38 C
Dhaka
Tuesday, April 16, 2024

Stock Android, Android One এবং Android Go এদের মধ্যে যা পার্থক্য

- Advertisement -

টেক জায়ান্ট গুগলকে সবাই চিনে থাকবেন তার সার্চ ইঞ্জিণ এবং গুগলের অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের জন্য। আর বর্তমানে আপনি অ্যান্ড্রয়েডের কয়েকটি সংষ্করণ বাজারে দেখে থাকবেন। যখন আপনি কোনো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস কিনতে যাবেন তখন দেখবেন যে ডিভাইসটির স্পেসিফিকেশনে লেখা থাকবে Android 8 বা Android One বা Android GO কিংবা যেকোনো কাস্টম অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন। এই চারটি জিনিস কিন্তু এক নয়, আর এ নিয়ে অনেকেই কনফিউশনে থাকেন যে আপনার ডিভাইসের সাথে যে অ্যান্ড্রয়েড টাইপটি পাচ্ছেন সেটা কি এবং এই Stock Android, Android One এবং Android Go এগুলোর মধ্যে পার্থক্যগুলো জানা থাকলে আপনি সহজেই নির্ধারণ করতে পারবেন কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত। তো চলুন প্রথম থেকেই জানা যাক।

নরমাল অ্যান্ড্রয়েড

Huawei P9

স্টক এবং নরমাল অ্যান্ড্রয়েড এর ব্যাপারে বলতে গেলে আগে একটি কথা বলে নেওয়া দরকার। অ্যান্ড্রয়েড হচ্ছে একটি ওপেন সোর্স টাইপের অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার। যেখানে যে কেউ অ্যান্ড্রয়েডের সোর্স কোডগুলো নিয়ে নিজের মতো করে কাস্টমাইজেশন করতে পারে। বড় বড় কোম্পানি যেমন Samsung, LG কিংবা Huawei গুগলের এই Android Open Source Project (AOSP) থেকে অ্যান্ড্রয়েডের সোর্স কোড নিয়ে তারপর তাদের ডিভাইসে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু কোম্পানিগুলো সরাসরি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করে না। যেমন স্যামসং তাদের ডিভাইসে নিজস্ব ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার করে, হুয়াওয়ে তাদের ডিভাইসে EMUI ইন্টারফেস ব্যবহার করে, Oppo তাদের ডিভাইসে ColorOS ব্যবহার করে। এগুলোর সবগুলোই হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েডের মডিফাইড ভার্সন। এই মডিফাইড অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনে স্টক অ্যান্ড্রয়েডের থেকে অনেক অ্যাপ এবং এক্সট্রা ফিচার পাওয়া যাবে। তবে এই অ্যান্ড্রয়েড সংষ্করণগুলোতে নিয়মিত আপডেট অনেক দেরিতে পাওয়া যায় এবং অনেক ডিভাইসে কোনো প্রকার অ্যান্ড্রয়েড আপডেটও পাওয়া যায় না।

- Advertisement -

স্টক অ্যান্ড্রয়েড

Google Pixel 1

গুগল পিক্সেল ডিভাইসগুলো বাজারে আসার আগে স্টক অ্যান্ড্রয়েডগুলো Nexus ডিভাইসে পাওয়া যেত। বর্তমানে গুগল পিক্সেল ডিভাইসগুলোতে স্টক অ্যান্ড্রয়েড পাওয়া যাচ্ছে। স্টক অ্যান্ড্রয়েড হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড এর অরিজিনাল ফর্ম যেখানে কোনো প্রকার মডিফিকেশন করা হয়নি। এই অ্যান্ড্রয়েডটি সরাসরি গুগল থেকে এসেছে এবং এখানে অতিরিক্ত কোনো প্রকার অ্যাপস, bloatware থাকে না। অ্যান্ড্রয়েডের সিকুরিটি আপডেট থেকে শুরু করে মেজর আপগ্রেড মানে অ্যান্ড্রয়েডে সবধরণের আপগেড/আপগ্রেড বিশ্বে সবার আগে এই স্টক অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে চলে আসে। যেমন পিক্সেল ৩ ডিভাইসে আপনি out-of-the-box থেকেই অ্যান্ড্রয়েড ৯ বা অ্যান্ড্রয়েড পাই পেয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান এবং অনান্য ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড ৯ আপগ্রেড পেতে পেতে ২০১৯ সালের প্রথম ২/৩ মাস লেগে যেতে পারে। স্টক অ্যান্ড্রয়েড হচ্ছে গুগলের অফিসিয়াল হার্ডওয়্যারে অফিসিয়াল সফটওয়্যার। এবার আসা যাক অ্যান্ড্রয়েড ওয়ানের ব্যাপারে।

Android One

২০১৪ সালে ইন্ডিয়ায় গুগল এই Android One প্রজেক্টের ডিভাইস প্রথম বাজারে আনে। শুরু দিকে এই প্রজেক্টের টার্গেট ছিলো low-end ডিভাইসে স্টক অ্যান্ড্রয়েডের স্বাদ ব্যবহারকারীদের উপহার দেওয়া। কিন্তু ৩/৪ বছরের মাথায় এখন গুগলের এই Android One প্রজেক্টের আন্ডারে এখন higher-end ডিভাইসও ব্যবহার করা হচ্ছে।

- Advertisement -

যে সকল ডিভাইসে Android One রয়েছে সেখানে গুগল নিজে থেকে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস দিয়ে থাকে। ধরুণ একটি স্মার্টফোন নিমার্তা কোম্পানি স্মার্টফোনের হার্ডওয়্যার বিল্ডিংয়ে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে, কোম্পানির ভালো retail এক্সপেরিয়েন্স রয়েছে এবং কোম্পানির জনপ্রিয়তাও বেশ। কিন্তু কোম্পানিটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের দিক থেকে একটু কাঁচা। সেসকল কোম্পানির সাথে গুগল এই Android One চুক্তিটি করে থাকে। এই চুক্তির আন্ডারে গুগল তাদের অ্যান্ড্রয়েডের সকল প্রকার আপডেট এবং আপগ্রেড একটি চুক্তিবদ্ধ নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে ডিভাইসগুলোতে দিয়ে থাকে।

Moto X4

অর্থ্যাৎ অ্যান্ড্রয়েডের কোনো প্রকার আপডেট এবং আপগ্রেড আসলে সর্বপ্রথম সেটা গুগলের নিজস্ব স্মাটফোনগুলোতে চলে যায় এবং তার পরেই অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান প্রজেক্টের ডিভাইসে দেওয়া হয়। Android One ডিভাইসগুলোতে আপনি স্টক অ্যান্ড্রয়েডের এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। এখানে কোনো প্রকার ম্যানুফেকচারিং কোম্পানির স্ক্রিণ, bloatware, ইউজার ইন্টারফেস নেই। অর্থ্যৎ তাহলে বোঝাতে পেরেছি যে Stock Android এবং Android One এর মাঝে পার্থক্য কি। এদের মাঝে পার্থক্য হলো Stock Android হচ্ছে গুগলের হার্ডওয়্যারে গুগলের পিউর অ্যান্ড্রয়েড এক্সপেরিয়েন্স, আর Android One হচ্ছে অন্য কোম্পানির হার্ডওয়্যারে গুগলের পিউর অ্যান্ড্রয়েড এক্সপেরিয়েন্স। আর উল্লেখ্য যে, Android One সার্ভিসের জন্য গুগল কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে নিদির্ষ্ট ফি নিয়ে থাকে।

Android Go

- Advertisement -

আর সবার শেষে আসলো Android Go । মূলত Android Go হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড অরিও বা Android 8 এর একটি লাইট ভার্সন যা low-end ডিভাইসের উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে। মানে ১ গিগাবাইট র‌্যামের ডিভাইসে যাতে ব্যবহারকারীরা স্মুথ অ্যান্ড্রয়েড অরিও চালাতে পারে সেজন্য Android Go তৈরি করা হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড গো অপারেটিং সিস্টেমের ডিভাইসগুলোতে গুগলের সকল স্টক অ্যাপ যেমন গুগল ম্যাপ, জিমেইল এগুলোর “Go” বা লাইট ভার্সন অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে।

Nokia 1

Android Go তেও স্টক অ্যান্ড্রয়েড স্কিন ব্যবহার করা হয়েছে তবে Android Go এবং Android One এর মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে Android Go কিন্তু সরাসরি গুগল থেকে আসে না! প্রথমে গুগল Android Go কে মেনুফ্যাকচার কোম্পানি যেমন নোকিয়াকে পাঠিয়ে থাকে তারপর নকিয়া তাদের ডিভাইসে Android Go দিয়ে থাকে। আর তাই Android Go এর আপডেট এবং আপগ্রেড সরাসরি গুগল থেকে আসে না। আর স্বাভাবিক ভাবেই Android Go তে Android 9 এর আপগ্রেড আসবে না এবং সিকুরিটি প্যাচগুলোও বেশ দেরি করে আসে আবার অনেক সময় আসেই না! Android Go এর জনপ্রিয় একটি ডিভাইস হচ্ছে Nokia 1 যেটা বাংলাদেশে ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

পরিশিষ্ট

যদি এক কথায় সোজা ভাবে বলি তাহলে অ্যান্ড্রয়েডকে আপনি দুটি ভাবে পাবেন, একটি হচ্ছে নরমাল অ্যান্ড্রয়েড যা Samsung, Huawei, LG, Xiaomi, Oppo, Vivo সহ সকল প্রকার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস কোম্পানির স্মার্টফোনে পাবেন। এগুলোতে অ্যান্ড্রয়েডকে কোম্পানি নিজের মতো করে কাস্টমাইজেশন করে নিয়েছে আর এতে আপনি পিউর অ্যান্ড্রয়েড স্বাদ পাবেন না। আর আরেকটি হচ্ছে স্টক অ্যান্ড্রয়েড যেখানে কোনো প্রকার কাস্টমাইজেশন ছাড়াই পিউর অ্যান্ড্রয়েডের স্বাদ আপনি উপভোগ করতে পারবেন। আর স্টক অ্যান্ড্রয়েডের স্বাদ পাওয়া যাবে ৩টি ফ্লেভারে! ১) স্টক অ্যান্ড্রয়েডযুক্ত ডিভাইসগুলোতে, ২) Android One যুক্ত ডিভাইসগুলোতে এবং ৩) Android Go যুক্ত ডিভাইসগুলোতে। তবে এদের মধ্যে Android Go ডিভাইসগুলোতে কিছু লিমিটেডশন রয়েছে। আশা করবো আজকের পোষ্টটি পড়ে আপনি অ্যান্ড্রয়েডের এই কনফিউজিশন ভার্সনগুলো সম্পর্কে বেসিক ধারণা পেয়েছেন। আরেকটি কথা হচ্ছে আপনি চাইলেই যেকোনো নরমাল অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে স্টক অ্যান্ড্রয়েডের স্বাদ পেতে Pixel লাঞ্চার ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু এই পদ্ধতিতে স্টক অ্যান্ড্রয়েডের স্বাদ পেলেও নিয়মিত আপগ্রেড কিন্তু দ্রুততর পাচ্ছেন না, মানে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো অবস্থা আর কি!

আর যদি সময় পান তাহলে আনঅফিসিয়াল ফোন সম্পরকে পড়ে আসতে পারেন এখানে ক্লিক করে।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here