30 C
Dhaka
Thursday, April 25, 2024

Odessey G9 স্যামসাং, দ্যা বেহেমথ

- Advertisement -

গত বছর স্যামসাং একটা সাদা রঙয়ের মনিটর রিলিজ করে যেটা এতটাই কার্ভ আইমিন এতটাই কার্ভ দেখতে একদম নৌকার মত। চেষ্টা করলে হয়ত পাল উড়িয়ে বুড়িগঙ্গা পাড়ি দেয়া যাবে। মাত্র ৪৯ ইঞ্চির মনিটর খানার বাক্স লম্বায় ৪ ফুটের মত, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের জিনিসটা স্যামসাং মাস কয়েক আগে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।

আনবক্সিং Odessey G9

ফ্ল্যাগশিপ জিনিস পত্র, ব্যবহার করতে না পারলেও দেখতে খারাপ লাগে না। বাক্সের ভিতরে প্রথমেই চোখে পড়বে, বুমেরাং সদৃশ স্টান্ডের লেগ বা পা। যারা ছোট বেলায় মোগলি দেখেছেন তাদের কাছে বুমেরাং খুব পরিচিত একটা বস্ত। এরপর স্ট্যান্ডের আর্ম বা নেক যে যা বলেন, বেশ ভারী, বেসবল ব্যাটের মত। তারপরে প্লাস্টীকের বাটি, বাক্সের এই প্রান্তে আবার ম্যানুয়াল এবং কিছু কেবলস, এর নিচে ফোমে মোড়ানো একটি লোহার বাটি।

- Advertisement -

সব শেষে একটা প্লাস্টিকের ঢাকনা, সম্ভবত পোর্টস আর কেবলস হাইড করার জন্য। নিচের লেয়ার ককশিট সরিয়ে সেই বহুল প্রতিক্ষিত নৌকা সদৃশ প্যানেল খানা। গত জুনে কিছু কাস্টমার এমাজনে কমপ্লেন করে যে তাদের প্যানেল খানা মনিটর থেকে খুলে গেছে, ফর্চুনেটোলি স্যামসাং পড়ে সব মনিটর ফেরত নিয়ে ইস্যুটা ফিক্স করে ফেলে। তাই আমাদের ইউনিট খানাও এই বিপদ থেকে মুক্স। নচেত হাজার দুয়েক ডলারের নৌকায় পানি উঠে গেলে রক্ষে নেই।

এসেম্বলিং

ছোটো খাটো মনিটর গুলো এসেম্বল করা হাতের পাঁচ হলে জি ৯ এসেম্বল হাতের দশ। আর্মটা প্যানেলের ব্যাকে প্লেস করে স্ক্রু দিইয়ে আটকে দিতে হবে। এটুকু বেশ স্ট্রেস ফরোয়ার্ড। আর্মের উপরের পার্টটা একটা ঢাকনার মত, এটা খুলে ভেতরে ক্যাবল গুলো রাউট করে যাবে বলে মনে হচ্ছে।

আর্মের জয়েন্ট এর উপরে প্লাস্টীকের বাটী খানা বসিয়ে দিতে হবে, এতে স্ক্রু গুলো দেখা যাবে না। পিছনের থ্রি পিন পাওয়ার কেবল আর ডিসপ্লে পোর্ট ক্যাবল কানেক্ট করে আর্মের পিছনে দিইয়ে রাউট করে ফেলে রাকিব। আর্মের কভার দিয়ে কেবল গুলা ঢেকে ফেলার পড়ে এবার বুমেরাং ছোড়ার পালা। বুমেরাং খানা আর পাঁচটা মনিটরের মত আর্মের নিচে স্ক্রু মেরে এসেম্বলের কাজ মোটামুটি শেষ।

- Advertisement -

দেখতে কেমন?

সাদা মনিটরটার মধ্যে একটা ফিউচারিস্টিক ফিনিস আছে। পিছনে একটা গোল রঙয়ের আরজিবি রিং আছে, দেখতে চমতকার এর নাম দেয়া হয়েছে ইনফিনিট কোর, রেইনবো, ব্রিধিং, পালস টাইপ গোটা পাচেক ইফেক্ট দেয়া যায় এতে। ১২০ মিমি পর্যন্ত হাইট এডাজাস্ট করা যায়, আছে টিল্ট সুইভেল সুবিধা। আর্মের টপে একটা হেডফোন হ্যাঙ্গার আছে।

আইও পোর্টস

কানেকশন এর জন্য দেওয়া হয়েছে দুইটা ডিসপ্লে পোর্ট ১.৪, HDMI 2.0, যেটা দিইয়ে ৫কে ৬০ হার্জ চলবে অথবা ৪কে ১২০ হার্জ, এছাড়াও ডুয়াল ইউএসবি ৩.০ আর হেডফোন জ্যাক দেয়া আছে। ডিসপ্লে পোর্ট ১.৪ দিয়ে গ্রাফিক্স কার্ডের সাথে কানেক্ট করে ৫কে তে ২৪০ হার্জ এক্সেস করা যাবে। ২৪০ হার্জ অন করতে OSD মেনু থেকে। মনিটরের নিচের দিকে একটা জয়স্টিক দেয়া আছে, যেটায় ক্লিক করে OSD মেনু অন করা যাবে। মেনুটা বেশ ইউজার ফ্রেন্ডলি মনে হয়েছে, দেয়া আছে বেশ কিছু দরকারি সেটিংস। দরকার মত কাস্টমাইজ কররা যায় সহজেই।

- Advertisement -

ফিচারস

বেশ কিছু প্রি ক্যালিব্রেটেড পিকচার মোড দেইয়া আছে যেম্ন FPS, RTS, RPG, AOC, sRGB, high bright. pip , pbp মোড গুলার সাপোর্ট ও দেয়া আছে। HDR কন্টেন্ট দেখার সময় লোকাল ডিমিং কাজ করবে। ৪২০ নিটস ব্রাইটনেস, HDR10 কন্টেন্ট দেখার সময় কিছুসময়ের জন্য ১০০০ নিটস পর্যন্ত ব্রাইটনেস দিতে পারবে। মনিটরটার গেমিং হাইলাইট ফিচার গুলো হচ্ছে এর ১মিলিসেকেন্ড GtG রেসপন্স টাইম, ২৪০ হার্জ রিফ্রেশ রেট আর সার্টিফাইড জি সিঙ্ক ক্মপ্যাবিলিটি।

৪৮.৮ ইঞ্চির VA প্যানেল্টা ৫১২০ X 1440 পিক্সেলের ৫কে প্রতি ইঞ্চিতে আছে ১০৯ পিক্সেল, যার কারনে ছবি আর টেক্সট খুবই শার্প। সুপার আল্ট্রাওয়াইড মনিটর টার এস্পেক্ট রেশিও ৩২ঃ৯। অধিকাংশ নতুন গেম গুলাই ৩২ঃ৯ এস্পেক্ট রেশিওতে ফুল স্ক্রিন খেলা যায় তবে ভ্যালোরান্ট সহ কিছু গেম আছে যেগুলো এত ওয়াইড রেশিওতে স্কেল করা যায় না, এই ধরনের গেম গুলোতে ডিস্প্লের দুই পাশে ব্ল্যাক বার থাকবে।

এই মনিটার সবচেয়ে চোখে পড়ার মত ব্যাপারটা হচ্ছে এর কার্ভেচার। ১০০০R কার্ভেচারের এই মনিটর আসলেই একটা সাম্পান নৌকার মত। এতোটা কার্ভড কোন মনিটর আগে দেখে বলে মনে পড়ে না। যাদের কার্ভ অপছন্দ তারা ভয়াবহ বিরক্ত হতে পারেন, তবে যারা পছন্দ করেন,  মাঝখানে বসে গেম খেলার সময় একটা অদ্ভুত এমার্সিভ ফিল পাওয়া যায়। আই লেভেল থেকে প্রপার ডিস্ট্যান্স থাকে ডিস্প্লের টার কর্নার টু কর্নার। চারপাশে সবজায়গায় প্রপার ইন গেম এম্বিয়ান্ট এর ফিল পাওয়া যায়। সাইবার পাঙ্ক ২০৭৭ খেলেছিলাম আমরা ৫কে সেটিংসে, মনে হচ্ছিল কালার যেন ঠিকরে ঠিকরে পড়ছে।

প্যানেল

১০ বিট এই প্যানেলটা ভিএ হলেও এটাকে এমনভাবে ক্যালিব্রেট করা হয়েছে যে এটার কালার রিপ্রডাকশন টিএন প্যানেল থেকে বেটার এবং টপ আইপিএস প্যানেল গুলোর সাথে কম্পিট করার মত। প্যানেলে কোয়ান্টাম ডট এনহ্যান্সড ফিল্ম নামে একটা লেয়ার আছে, যেটার কারনে প্যানেলটার কালার গামুট রেঞ্জ এবং ব্রাইটনেস অনেক বেশি। ফ্যাক্টরি ক্যালিব্রেটেড এই VA প্যানেলটা 125% sRGB, 92% Adobe RGB এবং 95% DCI-P3 কালার দেখাতে সক্ষম। কোন VA প্যানেলে যে এই ধরনের কালার দেখানো সম্ভব এটা ধারনার বাইরে ছিল। এইখানেই ওয়ার্ল্ডের অন্যতম সেরা প্যানেল নির্মাতা স্যামসাং এর এক্সপার্টাইজ, একটা আপাত সাধারন প্যানেল ক্যালিব্রেট করে এই অসাধারন কালার তারা বের করে এনেছে। এই ক্যালিব্রেশন এর উপর আমাদের স্পাইডার ৫ এলিট দিয়ে আরেক দফা ম্যানুয়াল ক্যালিব্রেট করে নেই এক্টু ওয়ার্ম টোনে।

মতামত

কালার, কন্ট্রাস্ট, ব্রাইটনেস, এমার্সিভ ফিলিং, পুরো ফ্ল্যাগশীপ এক্সপেরিয়েন্স এর প্যাকেজ একটা। যাদের এর একপিস আপন করে নেয়ার মত ব্যালেন্স আছে, নিয়ে নিতে পারেন যদি স্যামসাং বাংলাদেশের কাছে থাকে আর কি, আর একাউন্ট খালি থাকলে আপাতত ভিডীও দেখেই সান্ত্বনা নিন। অবশ্য জি৯ এর ছোট ভাই জি৭ যার দাম লাখের নিচে সেটার দিকেও খেয়াল রাখতে পারেন। নিটপিকিং করার মত কিছু যদি করতেই হয়, তাহলে একদম ওয়াইড মুভি দেখতে গেলেও দুই পাশে ব্ল্যাক বার দেখতে পাবেন নিশ্চিত কারন, এত ওয়াইড এস্পেক্ট রেশিওতে রেগুলার মুভি গুলো রিলিজ হয় না। তাছাড়া বিল্ড কোয়ালিটির দিক থেকে এটা আরেকটু শক্ত পোক্ত হতে পারত। সত্যি কথা বলতে এত দামি আর ভারি মনিটর খানা উচু করে নিচতলায় আর বাইরে শুটিং করতে গিয়ে হাটু হালকা কাপছিল। পড়ে গেলে সব শেষ। যাই হোক শেষ পর্যন্ত মনিটর শেষ না হলেও ভিডীও শেষ, আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখার হবে পরে ভিডিওতে আল্লাহ্‌ হাফেজ।

https://youtu.be/02LXRy4RAu8

- Advertisement -

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Its a behemoth of a monitor. If you have the budget and love gaming, go for it. Odessey G9 স্যামসাং, দ্যা বেহেমথ